আতিক ফারুক

লেখক

আমার বই

একটা রঙিন খামে আমাদের কাশবন
১ জুন ২০২৩

একটা রঙিন খামে আমাদের কাশবন

প্রথাগত গল্পের বাইরে এ এক অবিন্যস্ত গদ্যশৈলী, উত্তমপুরুষের আদলে গড়ে উঠেছে... যদিও নানাবিধ রীতিনীতির কথা বলা হয়—তবু নিজের বলার ভঙ্গিমায় স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের রূপরেখা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। পাঠক কিভাবে গ্রহণ করবে তা তার পাঠ সীমাবদ্ধতা নির্ণয় করবে। কোনোকিছুই সর্বাঙ্গীণ উন্নতি হতে পারে না। আমার মনোগত বিভ্রম এক অলৌকিক শহর—ডেড সি বা ব্যবিলনের বিলুপ্ত উদ্যান।পৃথিবীর সবচেয়ে বিপর্যয়—ঘনায়মান বিপর্যস্ততার মাঝেও মানুষের এই বেঁচে থাকার লড়াই, টিকের থাকার লড়াই উদ্ভাবিত ভাবনার সীমানা পেরিয়ে বহুদূর ছুটে চলে।পরিগ্রহ এবং নিগ্রহ প্রতিবন্ধকতা—বাঁচা এবং বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নেই যেখানে, সেখানে এত এত গরিমা নিতান্তই বাস্তব উপলব্ধির বিপরীত সম্ভাবনার কথা বলে।এখানের গল্পগুলো কিরকম, মানোন্নয়নের বিবেচনায় তা কতটুকু উত্তীর্ণ—তা পাঠকের দায়িত্ব। মননশীল চিন্তার জায়গা থেকে লিখে গিয়েছি—ফলত ক্ষেত্রবিশেষে পাঠকের বুঝতে পারা বা না পারা নিয়ে আমার কোনো দ্বিধা নেই। একটা সর্বাঙ্গীণ গল্পের কি কি বৈশিষ্ট্য, কি কি উপকরণ না হলে সেটা গল্প না হয়ে গদ্য হয়ে ওঠে বা আদতে কিছুই হয়ে ওঠে না—তা ভাববার অবকাশ আমার নেই। গল্পের শুরু, শেষ বা অভ্যন্তরের অবকাঠামোগত বর্ণনাশৈলীই মূলত গল্পের রসদ। চিন্তাগত বৈপরীত্য না হলে নূতনতর উদ্ভাবন তৈরি হয় না। ভিন্ন ভিন্ন ভাবনার ফলেই ভিন্ন ভিন্ন সৃষ্টি।পাঠক, চলুন আমরা দূর দেশে হারিয়ে যাই—নাগিব মাহফুজের বেড়ে ওঠা শৈশব, কায়রোর গলিঘুঁজি মোড় থেকে বহুদূর গ্রাম, নীলনদের আল আকালেতা। মেহেরুন নেসার অতীত, আমার হারিয়ে ফেলা স্মৃতির দিন।প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ্যজনরা: গল্পপৃষ্ঠা: ১১২
বিস্তারিত জানুন
কতিপয় বৃহস্পতির দিনলিপি
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

কতিপয় বৃহস্পতির দিনলিপি

দৈনন্দিনের লিপিগুলো সংকলিত হয়ে ‘কতিপয় বৃহস্পতির দিনলিপি’ হয়ে ওঠেছে। তার মানে প্রতিদিনকারই খসড়া নয় শুধু, একই বৃত্তের মতো, ঘুরেফিরে প্রতিদিনের কথাই নয়—দিনলিপি, ডায়েরি, রোজনামচা, দিনপঞ্জিকা, জার্নাল, কতভাবে বলা যায় এই লেখাগুলো-কে। যার ভাববার সীমাবদ্ধতা প্রক্রিয়াগত অনুশীলনের দিকে ধাবিত হয়—তাকে বারংবার বলার প্রয়োজন নেই শিল্পের বিস্তৃত পথের কত বাঁক!যখন যা উপলব্ধি হয়েছে—তাই লিখেছি ডায়েরির পৃষ্ঠায়, যেন এ ছাড়া আমার মনের অবসাদ বা উচ্ছল সময়ের কথা কেউ শোনতে পায় না, একমাত্র ছলহীন বিমোহিত শ্রোতা এ।খানিক এভাবেও বলা যায়—আজ বিষ্যুদবার বা বৃহস্পতিবার। যেমন আমার ‘কতিপয় বৃহস্পতির দিনলিপি’-কে ‘কতিপয় বিষ্যুদবারের দিনলিপি’ও বলা যায়। তবু সেই একই বিষণ্ণতা থির দাঁড়িয়ে থাকে মাদরাসার বারান্দায়। পাঁচকলি টুপির সেলাই খুলে যাওয়ার মতোই বিষণ্ণ সেই দিন বা জুব্বার বুকপকেটে কলমের নিব ফেটে লেপ্টে যাওয়া কালির মতো দুরূহ কান্না।দিনলিপির পৃষ্ঠাগুলো আদতে নিজের সাথে বলা কথা—মুঠোফোনের সংলাপ, শেষ বিকেলে মন খারাপের মতো আরও যা আছে অসুস্থ দিনের উৎসব। নাপা ট্যাবলেট, প্লাস্টিক গ্লাসে পাউরুটি ভিজিয়ে খাওয়া দুপুর, বাকরখানি সন্ধ্যা।বইটি প্রকাশ করেছে পুনরায় প্রকাশন। রকমারিসহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপে পাওয়া যাচ্ছে।প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ্যগায়ের মূল্য: ২০০৳পৃষ্ঠা: ১২৮  ধরণ: দিনলিপি
বিস্তারিত জানুন
যেকোনো স্মৃতির পাশে
১ জুন ২০২২

যেকোনো স্মৃতির পাশে

যেকোনো স্মৃতির পাশে আমার পঞ্চম গদ্যের বই। এইসব গদ্যের সামগ্রীর উপাদান মূলত কি—এর অন্তর্নিহিত উপমার বৈশিষ্ট্যই বা কি, সেই গোলকধাঁধায় জড়াতে চাই না। শিল্পের নানান শাখাপ্রশাখা, ডালপালা রয়েছে। শুধু আলোচ্য বিষয়াবলীই নয়। জানতে হলে পড়ার বিকল্প নেই। সচেতন পাঠক বলতেই জানার কথা—আমার গদ্যের মাপকাঠি কি!বইটি প্রকাশ করেছে দারুল ইলম প্রকাশনী। রকমারিসহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপগুলোতে পাওয়া যাবে।প্রচ্ছদ: ফয়সাল মাহমুদপৃষ্ঠা: ৪৮ধরন: গদ্যগায়ের মূল্য: ১২০
বিস্তারিত জানুন
মেহেরুন, প্রিয়তম ফুল
১০ অক্টোবর ২০২১

মেহেরুন, প্রিয়তম ফুল

মেহেরুন, প্রিয়তম ফুল-কে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়—কোন বিশেষণে অভিহিত করা হলে এই ‘প্রিয়তম ফুল’ হয়ে উঠতে পারে আরও প্রিয়, আরও কাছে—একদম চিবুকের নিকটবর্তী। আমি বলতে পারছি না৷ মেহেরুন যে কোনো নির্দিষ্ট নারী নয় বা আমার জীবনে এমন কোনো নারী বাস্তবিকভাবেই এসেছিল কি না, সে প্রসঙ্গ অবান্তর। যেন অলক্ত পায়ে হেঁটে যাওয়া নববধূর মতো কিছুটা সংকোচে পড়ে গেছি আমি। সেজন্যই বলেছি—‘মেহেরুন নেসা কোনো নির্দিষ্ট নারীর নাম নয়। আমার প্রতিজন নতুন প্রেমিকার নাম-ই মেহেরুন। কিন্তু, আমি যাকে এই অব্দি প্রিয়তম মেহেরুন জেনে এসেছি—সে আমার হয়নি, হয়েছে রৌদ্রদগ্ধ দুপুরবেলার৷ হয়েছে সন্ধ্যার বিবর্ণ আকাশের। এক এক করে কত বেলা গড়িয়ে গেল—কাঙ্ক্ষিত ফুল আর ফুটে এলো না। যেন আমার মনের ভেতর তুমুল অসুখ জড়িয়ে আছে। পৃথিবীতে যে যা চেয়েছে—তা-ই পেয়েছে, শুধু আমি পাইনি। কেননা, আমার মন চড়ুই পাখির মতো চিঁচিঁ শব্দ করে উড়ে বেড়ায় এখান থেকে ওখানে, ওখান থেকে এখানে।একদিন, কতক সম্ভাব্য সহজতম উপায়ে খুব চেয়েছিলাম, তুমি আমার হও—আমি তোমার হই। অথচ, সবকিছু বদলে গেল। কি থেকে কি হয়ে গেল, আমার জানা নেই। কারণ, সমাজ বিবর্তনের প্রবর্তক আমি তো নই—মূর্খপাণ্ডারা। সবকিছু নিজের মতো হয় না—অদৃশ্য মিথের মতো চেপে যায়, যা ভেবে বসে থাকি একা। যদিও আমার একটা পথ ছিল—আমার একটা ভাবনার জগত ছিল—আজ আর কিছুই নেই। প্রসূত বৃক্ষের মতো পরিবর্ধিত আমার মন। যেখানে কোনোকিছুরই স্থায়িত্ব নেই, সেখানে মনের কি কথা’।আবার যখন খুব আনমনা বসে থাকি—তখন এভাবে লিখে রাখি:‘এক গভীর অভিনিবেশে চেয়ে আছি দুপুরের উদাসীন হাওয়ায়, মনের ভেলায় ভাসমান তারাপথ। সে আমার প্রতিবেশী হয়ে গেছে বহুদিন, একটি সোনালি আলোক রেখা প্রতিদিন পুবের সূর্য আমার জানলা ছুঁয়ে যায়। তখন তাহার কথা মনে পড়ে। তথাপি, সেই যে ভেঙেচুরে গেল জীবন—তা আর ফিরে আসে না, পুরোটা সময় কেবল অনিঃশেষ অন্ধকারে প’ড়ে থাকি, নির্মোহ মগ্নতার খাদজুড়ে অথইজল’।এই বইয়ে সংকলিত আঠরোটি গদ্য—প্রতিটির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য খুঁজতে গেলে পাঠক আশাহত হতে পারেন—কেননা, প্রতিটি গদ্যেই জীবনবোধ, আদর্শিক জীবন-যাপনের রূপরেখা, প্রেমিকার চুলের ঘ্রাণ, ব্যর্থ প্রেমিকের দুঃখবোধ, বাদল দিনের তুমুল স্মৃতিকাতরতা। অথবা, মেহেরুন নেসা-কে হারিয়ে আবারও খুঁজে পাওয়া। এইসব বিভেদ সংজ্ঞা আর উপসংহারের মধ্য দিয়েই ‘মেহেরুন, প্রিয়তম ফুল’ এর অভিযাত্রা। আমার অন্যান্য গদ্যের চেয়ে এখানের গদ্যগুলো নিঃসন্দেহে মনোরম। এ আমাকে বেশ আনন্দ দিয়েছে।বইটি প্রকাশ করছে ‘চন্দ্রবিন্দু’ প্রকাশন।
বিস্তারিত জানুন
বুনোফুলের দিন
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বুনোফুলের দিন

এই গ্রন্থটি মূলত গুচ্ছ ভাবনার সমন্বয়। যখন যা ভেবেছি, তাই যেন অভিভূত দৃশ্যপট তৈরি করেছে। প্রকৃতি, প্রেম, দেশ, নারী, যৌনতা, আরও বহু কিছু।বুনোফুলের দিন, দীর্ঘ অবসরের আখ্যান৷ এখানে যা যা উল্লিখিত—তা কোনো নির্দিষ্ট রীতিনীতিতে আবদ্ধ নয়, হতে পারে এ আমার যাপনের অভিব্যক্তি। আবার এ-ও হতে পারে যে, এ আমার ঘুমের বিছানা।প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ্যধরন: গদ্যপ্রকাশক: পুনরায় প্রকাশনপৃষ্ঠাঃ ৩২মূল্য: ৫০
বিস্তারিত জানুন
ধুলেপথে হাওয়া
১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ধুলেপথে হাওয়া

ধুলেপথে হাওয়া—আমার দীর্ঘ যাপনের অভিব্যক্তি। তোমাকে যা বলতে চেয়েছি, তা এইখানে লিপিবদ্ধ। আমার মন খারাপ, তোমাকে না দেখার অসুখ। আমাকে পড়ো, আমার লালিত চেতনায় বিশ্বাসী হয়ো না। আমি যা বলতে চেয়েছি, যা বলি—তা সম্পূর্ণ কল্পিত ক্যানভাসে আঁকা জীবনের স্বরলিপি অথবা অদৃশ্য হাহাকারের প্রতিধ্বনি। এইযে আকাশ ভরা জল, বৃৃষ্টির প্রানবন্ত মূর্ছনা। অচেনা রোদের ফুল। দীঘল চুলের উদ্ভাস এবং দুপুরের একান্ত নির্জীব কোলাহল। যেন সমূহ বিপন্ন প্রতিবেশ।এই ধুলোপথে হাওয়ার দিনে—শুকনো পাতার ওড়াউড়ির দিনে। ফুরিয়ে যাচ্ছে হেমন্তের বিকেল৷ শীতের সন্ধ্যা।ধরন: মুক্তগদ্যপ্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ্যপ্রকাশনী: বেহুলাবাংলা প্রকাশনগায়ের মূল্য: ২৫০
বিস্তারিত জানুন
এখানে আরেকটু রোদ
২ আগস্ট ২০১৯

এখানে আরেকটু রোদ

জাহিদুর রহিমের আলোচনাএকান্ত ও অফুরন্ত-রূপে সাহিত্য থেকেই সাহিত্যের জন্ম: কী লিখবো, সে-কথা কবিকে কানে-কানে ব’লে দিয়ে যায় বিশ্ব বা জীবন বা বিশ্বজীবন, বা বিশ্ব প্রকৃতি; কিন্তু সাহিত্যের ক্ষেত্রে কী-লিখবো আর কেমন ক’রে লিখবো অবিভাজ্য ব’লে রচনার আদর্শ না থাকলে বক্তব্য বিষয়ও মনের মধ্যে স্পষ্ট না”- বুদ্ধদেব বসু ['কবিতা' পত্রিকা/ আশ্বিন ১৩৫৩ সংখ্যা।বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী কবি টি এস এলিয়ট লিখেছিলেন, “Good poetry approximates a condition of good prose\"। এলিয়ট নিজে বড় কবি, এমনকি নোবেল বিজেতা হবার পরেও সাহিত্য আলোচনায় কেন গদ্যকে এতো গুরুত্ব দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে ভেবেছি অনেক। সাহিত্যে ‘ফিকশন’ আর ‘নন-ফিকশনে’র ভাগ আলাদা হবার আগে সব তো ছিল মিলেমিশে। ফরাসি গদ্যের ‘নব নির্মাতা’ মিশেল মতেইন এর ‘essai’  থেকে আধুনিক ইংরেজী গদ্যের জনক  ফ্রান্সিস বেকনের ‘essay’- যে অনেক দূরত্বে অবস্থিত এটা যেন আলাদা বুঝালেন বেকনের নিজ ভাষার এই কবি। এবং ‘এই বুঝানো’ ইংরেজী ভাষার ‘নীরস’, ‘শুষ্ক’ ও ‘বিবর্ণ’  জগতের প্রতি বিরাগ থেকে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি এলিয়টের বক্তব্যের উল্টোটাও সত্য মনে করি। ‘ভালো গদ্যের কাজও ভালো কবিতার কাছাকাছি পৌছানো’ এবং একই সাথে আলাদা এক সুরে পাঠকের সাথে একাত্ম হওয়া। ‘বেলেস লেতার’ এর প্রকৃত প্রতিশব্দ হিসেবে ‘মনোরম গদ্য’ বা ‘অনুপম গদ্য’ বা ‘অন্তরঙ্গ গদ্য’ এমন লেখাই সমীচীন। এতে বাংলা অভিধানগুলোর যত না উপকার, এর বেশি উপকার হয় পাঠকের। লেখকের লেখা মূল্যায়নের দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতা তৈরিতে কেবল নয়,  দরকার আধুনিক সাহিত্যের জটিল বিভাজনের সুস্পস্ট পথ নির্দেশের তাগিদে। এই কথাগুলো ভূমিকা হিসেবে নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।ব্যক্তি জীবন, বিশ্বজগত আর মানব জগতের সত্যকে হৃদয়ের রসে ভিজিয়ে সময়ের ডালিতে করে অর্ঘ্য দিয়েছেন তিনি ‘মিথ্যের সংসারে’।দু-দিন আগে আতিক ফারুকের গদ্যের বই ‘এখানে আরেকটু রোদ’ হাতে পেলাম। পড়া ও লেখা উভয় ক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত ‘নৈরাজ্যের’ সাক্ষী হয়ে একই সাথে আরও কিছু বইয়ের সাথে এই বই পড়ে ফেললাম। পাঠক হিসেবে যে কোন গদ্য পড়ার সময় আমি দেখতে চাই সেই গদ্যের ‘ক্রমগতি’ বা ‘বিন্যস্ততা’। বিষয় বা আঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকার করে নিয়েই বলতে চাই , লেখকের জন্য ‘লেখার ভেতরে গতিশীল থাকা’ই লেখক হিসেবে বিকাশের জন্য প্রথম শর্ত। যে কোন লেখা মূল্যায়নের জন্য বড় আলোচনা, অনুসন্ধান ও সময় সাপেক্ষ বিশ্লেষণ দরকার, আর কেউ হয়ত করবেন, আমি শুধু এই বইয়ে আতিক ফারুকের যে চলার দাগ সেটা চিহ্নিত করতে চাই।গদ্য ও কবিতার  উপলব্ধি ও প্রকাশে দুই বিপরীত দর্শন কাজ করে। কবিতা বাইরের সব বোধের আলো টেনে এনে একান্ত অন্তরে ধারন করে। গদ্য করে উলটো কাজ। গদ্য কোন একান্ত অনুভবকে বাইরের দৃশ্য প্রফুল্লতায় ধারন করে প্রকাশ করে। আতিক সময়, জীবন ও বোধের মিশেলে গড়া চেনা মাটিতেই নিজেকে মিলিয়েছেন। এজন্যই তাঁর গদ্যের স্বর আলাদা, নরম ও আন্তরিক। ব্যক্তি জীবন, বিশ্বজগত আর মানব জগতের সত্যকে হৃদয়ের রসে ভিজিয়ে সময়ের ডালিতে করে অর্ঘ্য দিয়েছেন তিনি ‘মিথ্যের সংসারে’। সেই ‘সত্যের স্বরূপ’ , ‘রসের ঘনত্ব’ আর ‘ডালির বিশালতা’- কোন অধ্যাপক বা গবেষক লিখুক, আমি কেবল লিখবো কি আছে সেই ডালিতে।লেখক যেন পথ খুঁজ্‌ছেন এক আলাদা প্রকরণ সৃষ্টির, একটা অদ্ভুত তাড়না আছে নিজেকে প্রকাশের পথ করে নিতে।‘এখানে আরেকটু রোদ’- বইয়ে লেখক ‘পরিচ্ছন্ন এক বোধ’ দিয়ে অন্যমনস্ক চোখ ও কানকে মনোযোগ দিতে বাধ্য করেন। আর পাঠকের  অনুভূতিকে এমন করে নাড়িয়ে যান, যেন পুনরায় তা আবার ভারসাম্যে ফিরে আসে। যেন যা পাঠক আশা করছ, তা না মনে হলেই বরং (পাঠক) নিজেকে খুঁজে পাবে আরেক ভাবনা আর ভুবনে। আর সে কারণেই পাঠকের জন্য তা হয়ে উঠবে আরও মুগ্ধকর, প্রত্যাশাহীন উত্তেজনাময় এক পথ চলা। আমার কেন যেন মনে হয়েছে আতিকের গদ্য  কোন কোন ক্ষেত্রে ‘অতিমার্জিত’, লেখার কোন কোন স্থানে ‘গদ্যের প্রসঙ্গ’ ও ‘প্রসঙ্গের ভাঙ্গন’ আছে। লেখক ইচ্ছে বা অনিচ্ছায় সেই ভাঙ্গনে বার বার পা রেখেছেন।গদ্যে আমি প্রতিজ্ঞা খুঁজি, খুঁজি নিজের মুক্তির এক ‘অবিকল্প আদর্শ’।গদ্যে আমি প্রতিজ্ঞা খুঁজি, খুঁজি নিজের মুক্তির এক ‘অবিকল্প আদর্শ’। এটা একান্ত নিজের। যদি তা ধরা না পড়ে, গদ্যের ভাষা যতই মরিচিকাময় হোক, যতই সহজপাচ্য মুগ্ধতা আনুক, পাঠক হিসেবে আমার কাছে সেটার স্থায়িত্ব থাকে না। ‘এখানে আরেকটু রোদ’- বইয়ে লেখক আপন ‘গদ্যের স্বর’ খুঁজেছেন প্রতি অক্ষরে। আত্ম-অনুসন্ধানের এক তাড়না আছে, যেখানে তিনি যেতে চান। সে তাড়নার সব কিছু জুড়ে একটা যত্ন আর সহৃদয় উপস্থিতির অনুভবও আছে সর্বত্র। লেখক যেন পথ খুঁজ্‌ছেন এক আলাদা প্রকরণ সৃষ্টির, একটা অদ্ভুত তাড়না আছে নিজেকে প্রকাশের পথ করে নিতে। সেই পথ খুঁজতে থাকাই তো আসল পথ , এই অন্বেষণের নির্মিতিই তো শিল্প।২০১৯ সালে প্রকাশিত বই।
বিস্তারিত জানুন